স্বাধীন আবাস (তৃতীয় অংশ)
থলথলে হাসি মুখে ধরে রেখেই মাটি ভাই মুখখানা বাঁকিয়ে বলেছিল-
– অ্যা.. কয়দিন পর তো এই বাড়ি আপনারই হইবো। আফনেই তো ঘুরবেন, ফিরবেন। এহন আফনে স্বাধীন ভাইয়ের রুমে যানগা। একদম চাইর তলার ছাদের উফর। যারে কয় চিলিকোটা। আফনে যান। আমি আফনার লাগান কফি লইয়া আহি। হের পর সারা বাড়ি ঘুইররা দেহামুনি।
ইতস্তত করে মেঘা বলেছিল-
– একদম উনার রুমে চলে যাব? উনি কিছু মনে করবেন না তো আবার?
– আরে আফামুনি, স্বাধীন ভাই কিছু মনে টনে করেন না। আর উনিই তো আমারে বইলা রাখছে আফনেরে যেন উনার রুমে বইতে বলি।
-কেন? উনি কি এখন বাসায় নাই ?
– আছে তো.. আছে। তয় উনার রুমে নাই। ওইযে গ্যারেজের হেই পাশে চিল্লাফাল্লা হুনতাছেন? ফুটবল খেলে পোলাপানগর লগে। হাত ঘড়ি এক নজর দেখে মাটি ভাই বলেছিল, আর তের মিনিট আছে। হেরপরই বাশিত ফুক দিয়া আমু। খেলার পর একখান গোসল দিবো। হের পর চিলিকোটায় যাব। আফনে স্বাধীন ভাইয়ের রুমে যান। রুমে ঢুকলেই দেখবেন ভালু লাগবো।
– আচ্ছা, মাটি ভাই। আমি যাচ্ছি। আপনার অপেক্ষায় থাকলাম কিন্তু!
– দাঁত আরও স্পষ্ট করে মাটি ভাই তখন বলেছিল আফনে কিন্তু আফা রসিক মানুষ আছেন। আচ্ছা যান। আমি কফি নিয়া আইতাছি।
এভাবেই পরিচয় হয়েছিল মেঘার মাটি ভাইয়ের সাথে। এরপর সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে বড়জোর এক মিনিট আর এখানে এক মিনিট। এই দুই মিনিটের মধ্যেই এখন কফি ট্রে নিয়ে হাজির।
– এত দ্রুত কফি বানিয়ে নিয়ে এলেন মাটি ভাই? আপনি তো অনেক ফাস্ট!
– সত্যি কথা বলতে কি আফামুনি, কফি আগেই বানান আছিল। এই বাড়িত কফি সবসমই বানানই থাহে। ফ্লেক্সে ভরপুর কফি। এইসব বাচ্চাগুলানের ও স্বাধীন ভাইয়ের মত হইছে কফির নিশা। এদের কফি খাওয়াইতে খাওয়াইতেই আমার জীবন শেষ।
মাটি ভাইকে দেখে অবশ্য মনে হচ্ছে না তার জীবন শেষ। বরং এদের কফি খাওয়াতে পেরে মনে হচ্ছে সে আনন্দিত। তার মুখের নির্ভেজাল হাসি সে ইঙ্গিতই দিচ্ছে।
– এইখানটাত বহেন আফামুনি। আমি বাশিত ফুক দিয়া আইতাছি।
প্রায় অর্ধেক রুমজুড়ে ঘেরা সোফায় কফি হাতে নিয়ে বসলো মেঘা।
চলবে..