যে লক্ষণগুলো দেখলে বুঝবেন আপনার কিডনি নষ্ট হচ্ছে, আজই সচেতন হোন
কিডনি
কিডনি হল এক জোড়া মুষ্টি-আকারের অঙ্গ যা পাঁজরের খাঁচার নীচে অবস্থিত। মেরুদণ্ডের প্রতিটি পাশে একটি করে কিডনি থাকে।
সুস্থ দেহের জন্য কিডনি অপরিহার্য। তারা প্রধানত রক্ত থেকে বর্জ্য পণ্য, অতিরিক্ত জল এবং অন্যান্য অমেধ্য ফিল্টার করার জন্য দায়ী। এই টক্সিনগুলি মূত্রাশয়ে জমা হয় এবং তারপর প্রস্রাবের সময় সরানো হয়। কিডনি শরীরের পিএইচ, লবণ এবং পটাসিয়ামের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণ করে। কিডনি হরমোন তৈরি করে যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং লাল রক্ত কোষের উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করে। কিডনি এমনকি ভিটামিন ডি এর একটি ফর্ম সক্রিয় করে যা শরীরকে ক্যালসিয়াম শোষণ করতে সহায়তা করে। কিডনি যখন তার এইসব স্বাভাবিক কার্যক্রম চালনা করতে ব্যর্থ হয় তখন কিডনি নষ্ট হয়ে যায়। কিডনি নষ্ট হলে নানা রকম জটিল রোগ সৃষ্টি হয় এবং একজন মানুষ মৃত্যুবরণ করে।
কীভাবে বুঝবেন কিডনি নষ্ট হচ্ছে?
>ঘন ঘন প্রস্রাব হচ্ছে কি না খেয়াল রাখতে হবে।
>প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া হচ্ছে কি না খেয়াল রাখতে হবে।
>পা ফুলে যাচ্ছে কি না লক্ষ করুন।
>খাবারে অরুচি ভাব হতে পারে।
>বমি বমি ভাব হতে পারে।
>হঠাৎ ওজন কমে যেতে পারে।
>অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ দেখা দিতে পারে।
আরএমই টেস্ট করে জানা যায় কিডনির স্বাস্থ্য সম্পর্কে। এ ছাড়াও আল্ট্রাসনোগ্রাম করতে পারেন।
কিডনি রোগ কাদের হওয়ার ঝুঁকি বেশি?
যারা দীর্ঘদিন ধরে ডায়বেটিস ও উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন তাদের ক্ষেত্রে কিডনি রোগ হওয়ার সম্ভাবনা সবথেকে বেশি। এছাড়া হঠাৎ করে প্রচুর বমি বা পাতলা পায়খানা হলেও কিডনি অনেকটুকু ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ স্যালাইন খাওয়ার মাধ্যমে তা পূরণ করা না হয়। অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণের ফলে কিডনী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কারণ এতে শরীর থেকে অতিরিক্ত প্রোটিনও বের হয়। ফলশ্রুতিতে শরীরে রক্তচাপ বেড়ে যায়। রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার ফলে পা তে পানি জমে, পা ফুলে যায়।
ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং অন্যান্য বিভিন্ন দীর্ঘস্থায়ী (দীর্ঘমেয়াদী) অবস্থার কারণে কিডনি ক্ষতি হতে পারে। কিডনি রোগের কারণে দুর্বল হাড়, স্নায়ুর ক্ষতি এবং অপুষ্টি সহ অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে।
সময়ের সাথে সাথে রোগটি আরও খারাপ হলে, আপনার কিডনি পুরোপুরি কাজ করা বন্ধ করে দিতে পারে। এর মানে কিডনির কার্য সম্পাদনের জন্য ডায়ালাইসিস করতে হবে। ডায়ালাইসিস হল একটি চিকিৎসা যা একটি মেশিন ব্যবহার করে রক্তকে ফিল্টার করে এবং বিশুদ্ধ করে। এটি কিডনি রোগ নিরাময় করতে পারে না, তবে এটি আপনার জীবনকে দীর্ঘায়িত করতে পারে।
কিডনি রোগ প্রতিরোধে করণীয়
স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করুন।
শারীরিক ব্যায়াম ও কার্যকলাপ আপনার দৈনন্দিন রুটিনের অংশ করুন।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
যথেষ্ট ঘুমান।
ধূমপান পরিহার করুন।
অ্যালকোহল গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন।
দুশ্চিন্তা করা থেকে বিরত থাকুন, সর্বদা প্রফুল্ল থাকার জন্য প্রয়োজনীয় কাজ গুলো করার চেষ্টা করুন।
ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদরোগ নিয়ন্ত্রণ করুন।