প্রথম প্রেম – কবিতা
দিগন্ত বিস্তৃত তুমি ;
পৃথিবীর কক্ষপথে ঘূর্ণায়মান সূর্যটাও মুখ লুকায় কখনো কখনো,
সোনায় সোহাগা ধানক্ষেতটাও সরে যায় দূরে।
অবহেলার বনফুলেরা তোমার অদৃশ্য পায়ের নূপুর হয়ে জীবন করেছে ধন্য,
এদিকে তোমায় দেখতে দেখতে আকাশের সীমানায় থাকা আকাশটাও গেছে ক্ষয়ে।
রোয়াকে চঞ্চল চড়ুই কিংবা ধানশালিকটাও তোমাতে মুগ্ধ,
ছাদ বাগানের পাথরকুচিও হতে চায় জাতিস্মর, শুধু তোমার জন্য।
স্রোতস্বিনী সাগর কিংবা নদীটাও বুকের বিজনে ঢেউ তুলে তোমাকে জানায় অভিবাদন,
সিংহল মায়ায় বুদ হওয়া প্রেমিক প্রেমিকাকে ভুলে তোমাতে বুদ হয়,
নিদাঘ চাঞ্চল্যে উদ্বুদ্ধ করে ঘুমন্ত চোখকে ।
স্বরলিপিতে আনমনে বেজে ওঠে তোমার গুণকীর্তন,
ভূমিষ্ঠ শিশুটাও তোমায় দেখেই প্রেম শেখে, সুন্দরের নাভীমূল ছুঁয়ে ফেলে সময় গড়াতে না গড়াতেই।তুমিই যে প্রথম প্রেম।
সাত রঙা রংধনু প্রায়শই তোমার রূপবতী অঙ্গে নির্মেদ মাধুরী ছড়ায়,
নতুন নতুন প্রেমে পড়লে রমণীরা যেমন করে সাজে ঠিক তেমনই।
পাহাড়-ঝর্ণার মনোহর রূপালীতে তুমি তৃপ্ত করো বারংবার।
কখনো কখনো তোমার প্রলঙ্করী রূপে কেঁপে ওঠে অন্দরমহল,
কালবৈশাখীর মতো ভয়ার্তরূপে উদ্বেলিত করো সমগ্র জনপদ,
ভূ-কম্পন কিংবা জল প্লাবনে অসহায়ত্বের ভেলা ভাসিয়ে দাও, যেমনটা নবদম্পতির বিচ্ছেদে হৃদয়ে ধস নামে, ঠিক তেমন করেই।
এতোকিছুর পরেই তোমাতে মুগ্ধ বাঙালী, বঙ্গবাসী, তোমাতে নিমগ্ন প্রকৃতির প্রেমে আচ্ছাদিত বিশ্ববাসী।
আগুনের হলকার মতো প্রলঙ্করী বেদনার পরেও তোমাতেই নির্ভরশীল মোরা, তোমাকেই ভালোবাসি।
বাংলাদেশ,প্রিয় জন্মভূমি তোমাকে ভালোবাসি।
লেখক,
বিশাল সাহা
শিক্ষার্থী প্রাণিবিদ্যা বিভাগ, ঢাকা কলেজ, ঢাকা।