বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় -কৃষি প্রধান দেশের হাতিয়ার
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
দক্ষিণ এশিয়ার সর্ব বৃহৎ কৃষি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। ময়মনসিংহ শহরের প্রাণকেন্দ্রে ব্রহ্মপুত্র নদের তীর ঘেষে ১২০০ একর এলাকা জুড়ে অবস্থিত এই সবুজ চত্বর। আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে কৃষি প্রধান বাংলাদেশের উন্নতির লক্ষে কাজ করে যাচ্ছে এই প্রতিষ্ঠান। সম্যক ব্যবহারিক ও তাত্বিক জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে দক্ষ কৃষিবিদ, কৃষি প্রকৌশলী, প্রাণীবিজ্ঞানী তৈরী করাই উক্ত প্রতিষ্ঠানের মূল লক্ষ্য।
কৃষি অনুষদ ও ভেটেরিনারি অনুষদ নিয়ে ১৯৬১ সালে যাত্রা শুরু হয় ’পূর্ব পাকিস্তান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে। স্বাধীনতার পরে নামকরণ করা হয় স্বাধীন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ব বিদ্যালয়। এর পরবর্তীতে আরো নতুন অনুষদ তৈরির মাধ্যমে এগিয়ে চলা বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের।
মুক্তিযুদ্ধের পর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করলেন তখন তিনি বুঝতে পারলেন দেশের অর্থনীতি, সর্বোন্নতির উপর কৃষির গুরুত্ব অপরিসীম। কৃষিকে বাদ দিয়ে বাঙালির উন্নতির কথা চিন্তা করা অসম্ভব। এরই সুত্র ধারায় ১৯৭৩ সালের ১৩ ই ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সমাবর্তন অনুষ্ঠানের কৃষিবিদদের প্রথম শেণীর মর্যাদা প্রদান করেন।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ চত্বর মনোমুগ্ধকর । ব্রহ্মপুত্র নদের পাশেই রয়েছে বোটানিকেল গার্ডেন। যাতে রয়েছে আধুনিক গষেণার জন্য বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ। তাছাড়াও রয়েছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, কৃষি খামার, কৃষি জমি। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রে রয়েছে দেশের সর্ববৃহৎ জার্ম প্লাজম সেন্টার। এছাড়া সুবিশাল আম বাগানসহ রয়েছে মৎস্য খামারও । বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
চত্বরের বিশালতার মধ্যে যে জায়গাটি শিক্ষার্থীদের অনেক সুন্দর মূহুর্ত ধারণ করে আছে সেটি হচ্ছে প্লাটফর্ম। চায়ের কাপ হাতে প্লাটফর্মে আড্ডার আনন্দ অতুলনীয়। তাছাড়া বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য রয়েছে ২২০০ আসন বিশিষ্ট ”শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তন’। তারপাশেই রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নির্মিত ভাষ্কর্য “ বিজয় ৭১”।
সম্পূর্ণ আবাসিক ক্যাম্পাসটিতে রয়েছে ১৩ টি আবাসিক হল (ছেলেদের জন্য ৯ টি , মেয়েদের জন্য ৪ টি). বর্তমান পর্যন্ত মোট ৬ টি অনুষদ নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। অনুষদ গুলো হলো;
১. কৃষি অনুষদ
২. ভেটেরিনারি অনুষদ
৩. কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান অনুষদ
৪. পশুপালন অনুষদ
৫.কৃষি প্রকৌশল ও কারিগরি অনুষদ
৬. মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদ
আজ আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারকে সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে আজ উৎপাদনের দিক দিয়েও এগিয়ে গিয়েছে বাংলাদেশ। ফসল, মৎস্য, ডেইরী, পোল্ট্রি সকল ক্ষেত্রে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আধুনিক কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে আগের তুলনায় প্রায় ৪ গুণ। এমন পরিবর্তনের ধারা অক্ষত রাখতে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রেজুয়েট গণ । এসব সফলতার বাইরেও আছে বিভিন্ন হাইব্রিড এবং নতুন প্রজাতি উদ্ভাবন। যার মাধ্যমে কৃষকরা এখন সহজেই আরো বেশি লাভবান হচ্ছে । কৃষি ক্ষেত্রে এভাবে পরিবর্তন সাধনের মাধ্যমে ভবিষ্যতে আরো সম্ভাবনার জন্যে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।
লেখক,
জাহিদুল ইসলাম
অনার্স ২য় বর্ষ, কৃষি অনুষদ,
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
অনুষদ ৬টি। ফিসারিজ বাদ পড়ছে।
দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ ছিলাম এক সময়। এখন আর নেই
Thanks… Corrected!