কবিতা

দুই যাযাবর

দুই যাযাবর

 

আমরা ছুটে চলি ভিন শহরে 

পাশাপাশি বিপরীতে  দুই বগিতে

দর্শন মোদের ওই এক স্টেশনে

কখনো সকাল কিংবা রাতে।

 

তোমার উদ্বেগ ভরা চাহনিতে ছুটে আসা

আর আমার স্টেশনের কোনো বেঞ্চে, 

গুপটি মেরে বসে থাকা।

 

উদ্দেশ্য আর তেমন কিছু নয়

গ্রীষ্মের রোদে তোমার খিলখিল হাসি।

কিংবা বৃষ্টিতে ভিজে কপালে লেপটে থাকা চুলে

আর বান্ধুবিদের জোড়ে তোমার চা স্টলে

চুমু দেওয়া সেই চায়ের কাপে-

সেই সৌন্দর্য যদি সৈয়দ মুজতবা খুঁজে পেতো

নির্ঘাত কাবুল ছেড়ে তার শহরে 

তোমায় নিয়ে বসতি শুরু করতো।

 

সেদিন যখন নীল পাড়ের শাড়িটা পরে 

স্টেশনে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিলে

স্টলে বসে থাকা এক চাচা তো বলেই ফেললো-

এই মেয়ে আমার বড় ছেলের বউ হবে!

ছেলে আমার ডাক্তার,এফসিপিএস??

পেছনের বেঞ্চে বসে থাকা বেচারা আমি

এই যা- এতদিনের খাটনি যায় বুঝি সবই!

 

কিন্তু তোমার তাকে না করে দেওয়ায়

কল্যাণির বিয়ে না করায় অনুপম যতটা খুশি হয়েছিল

বিশ্বাস কর তার চেয়ে হাজার গুণ শান্তিতে 

বুকটা ভরে গিয়েছিল। 

হবই না বা কেনো!

তোমার সৌন্দর্যের লেলিহান দাবানলে

আরো কিছুদিন যে নিজেকে পোড়াতে পারব।

 

এক অপ্সরা যেমন হাজার ঋষির 

ধ্যান ভগ্নে যথেষ্ট 

তোমার মাধুর্যে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ লাগলেও 

হব না আমি বিচলিত। 

 

তোমায় পাওয়ার নেই কোনো ওগো সাধ্য

রোবটের মতো দেখেই যাব অনবদ্য। 

 

হ্যাঁ আমি তোমার রূপে বারবার ছুটে আসি

দূর থেকেই শুধু প্রেমে পড়ি।

জানালার পাশে বসে পশ্চিম দিগন্তে 

তোমার মিশে যাওয়া শুধু দেখি।

শুধু একটাই আরজি-

 

এতো জলদি তুমি বেঁধো না ওগো ঘর

যদিও মোরা

দুই বিপরীত বগির দুই ভিন্ন যাযাবর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link