আগামী কয়েকদিন এর মধ্যে একটি রকেট পৃথিবীতে আছড়ে পড়তে পারে। উৎক্ষেপণ এর পর চীনা মহাকাশ কেন্দ্রের গুরুত্বপূর্ণ অংশবাহী একটি ভারী রকেট মহাকাশের কক্ষপথে ঢুকে পড়ায় নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে রকেটটি আছড়ে পড়তে পারে। ‘লং মার্চ ৫বি ওয়াই টু’ নামের ২১ টন ওজনের রকেটটি সম্প্রতি চীন থেকে নিক্ষেপ করার পর নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। বায়ুমণ্ডলে রকেটটি আগামী ৮ মে নাগাদ পৃথিবীর প্রবেশ করতে পারে বলে মার্কিন সেনাবাহিনীর স্পেস বিভাগের কমান্ডের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে। পৃথিবীতে আছড়ে পড়ার কয়েক ঘণ্টা আগে বলে দেওয়া যাবে এটি পৃথিবীর ঠিক কোন স্থানে পড়বে কিন্তু এখন রকেটটি অনেক গতিতে মহাকাশের কক্ষপথে ঘুরতে থাকায় এর গতিপথ শনাক্ত করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অ্যারোস্পেস করপোরেশন, ক্যালিফোর্নিয়া ভিত্তিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান এর তথ্যানুযায়ী, রকেটটি প্রশান্ত মহাসাগরীয় কোনো অঞ্চলে পতিত হবে। যদিও নির্দিষ্ট কোন জায়গায় তা নিশ্চিতভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না।
সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিজ্ঞানী জনাথন ম্যাকডোয়েল যিনি যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রো ফিজিক্সের বিজ্ঞানী তিনি বলেছেন যে রকেটটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে আগামী ৮ থেকে ১০ মে’র মধ্যে প্রবেশ করবে। এরই মধ্যে প্রতি দুই দিনে রকেটটি পৃথিবীকে ৩০ বার প্রদক্ষিণ করবে। আর এ সময়ে প্রতি ঘণ্টায় এর গতি থাকবে ১৮ হাজার মাইল (প্রায় ২৯ হাজার কিলোমিটার)। কাজেই যদি এক ঘণ্টার হিসাবে একটু এদিক সেদিক হয়, তাহলে এটি ধারণা করার স্থান থেকে ১৮ হাজার মাইল দূরে কোথাও আছড়ে পড়তে পারে।
জানা গিয়েছে চীন পৃথিবীর কক্ষপথে নিজেদের একটি মহাকাশ কেন্দ্র বানাতে যাচ্ছে। আর এই প্রকল্পের নাম দিয়েছে ‘তিয়ানহে মহাকাশ স্টেশন’। দেশটি কিছুদিন ধরেই এটি উৎক্ষেপণের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। গত মাসের ২৮ এপ্রিল চীনা মহাকাশ গবেষণা সংস্থা প্রকল্পের ঐ মহাকাশ স্টেশনের একটি অংশ যাকে মডিউল বলা হয়, পরীক্ষামূলকভাবে পৃথিবীর কক্ষপথে পাঠাতে ‘লং মার্চ ৫বি’ নামের রকেটটি উৎক্ষেপণ করেছিল।
‘তিয়ানহে’ নামক ঐ মডিউলে নভোচারীদের থাকার জন্য ঘর রয়েছে। ‘লং মার্চ-ফাইভবি’ নামের রকেটের মাধ্যমে চীনের ওয়েনচাং মহাকাশ উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে এই ‘তিয়ানহে’ মডিউলটি উৎক্ষেপণ করা হয়েছে।
২০২২ সালের মধ্যে নতুন মহাকাশ কেন্দ্রটি চালু হবে বলে আশা করছে চীন।
উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন নামক মহাকাশে এখন একটিই স্পেস স্টেশন আছে যা চীনের ব্যবহারের অনুমতি নেই। এই জন্যই চীন চাচ্ছে নিজেদের একটি মহাকাশ কেন্দ্র হোক এবং এই লক্ষ্যে তারা কাজ ও করে যাচ্ছে।