মিজানুর রহমান আজহারীর জীবনী | Biography of Mizanur Rahman Azhari
ছোট-বড় সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে তার ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে । বর্তমানে অনেক ইসলামী চিন্তাবিদ রয়েছে তবে তার মধ্যে স্পেশাল মিজানুর রহমান আজহারী। আজ তার সম্পর্কে বিস্তারিত জানব।
নামঃ মিজানুর রহমান (Mizanur Rahman Azhari), তবে মিশরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার কারণে তার নামের সাথে আজহারী উপাধি যুক্ত হয়েছে। মিজানুর রহমান আজহারী ২৬ শে জানুয়ারি ১৯৯০ সালে ঢাকার ডেমরা জন্মগ্রহণ করেন । তবে তার পৈতৃক নিবাস কুমিল্লায়।
মিজানুর রহমান আজহারীর পারিবারিক জীবনঃ
মিজানুর রহমান আজহারীর (Mizanur Rahman Azhari) পরিবারে তার মা-বাবা ও একটি ভাই রয়েছে।
মিজানুর রহমান আজহারী ২০১৪ সালের ২৯ শে জানুয়ারি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন এবং তার দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
মিজানুর রহমান আজহারীর শিক্ষা জীবনঃ
মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী (Mizanur Rahman Azhari) জীবনীঃ ঢাকার ড্যামরায় অবস্থিত স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দারুন্নাজাত সিদ্দিকিয়া কামিল মাদ্রাসা থেকে ২০০৪ সালে দাখিল অর্থাৎ এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন এবং ২০০৬ সালে কামিল অর্থাৎ এইসএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ ৫ সহ বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বার্ড এর টপ মেরিট লিস্টে জায়গা করে নেন। ২০০৭ সালে ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক আয়োজিত মিশর সরকারের শিক্ষা বৃত্তি পরীক্ষায় তিনি হাজার হাজার কওমি ও আলিয়া মাদ্রাসার ছাত্রদের মধ্যে বরাবরের মতো প্রথম স্থান অধিকার করে মিশরের আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্ডারগ্রাজুয়েট করার জন্য মিশরে গমন করেন।
সেখান থেকে তিনি ডিপার্টমেন্ট অফ তাফসির এন্ড কুরাআনিক সাইন্স হতে ২০১২ সালে ৮০ পার্সেন্ট সিজিপিএ নিয়ে অনার্স এ উত্তীর্ণ হন। মিশরে ৫ বছর শিক্ষাজীবন অতিবাহিত করার পর তিনি গার্ডেন অফ নলেজ খ্যাত মালয়েশিয়ার ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি থেকে পোষ্ট-গ্রাজুয়েসোন ও এমফিল এবং পিএইসডি করার সিদ্ধান্ত নেন। ২০১৩ সালে তিনি মালয়েশিয়া গমন করেন উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অফ কোরআন এন্ড সুন্নাহ স্টাডিজ থেকে তিনি ২০১৬ সালের মধ্যে পোস্ট-গ্রাজুয়েশন এবং এমফিল শেষ করেন। মাস্টার্স এ তার সিজিপিএ ছিল ৩.৮২ আউট অফ ৪ পয়েন্ট।
এমফিল এ তার গবেষণার বিষয়বস্তু ছিল হিউম্যান আম্ব্রয়লজি ইন দা হোলি কুরআন। তারপর তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইসডি কেন্ডিডেট হিসেবে মনোনীত হন। হিউম্যান বেহাভিয়ারেল ক্যারেক্টারইসটিক্স ইন দা হোলি কুরআন অ্যান্ড অ্যানালিটিক্যাল স্টাডি এর উপরে তিনি বর্তমানে পিএইসডি গবেষণা করছেন। উল্লেখ তার এমফিল এবং পিএইচডি গবেষণার মাধ্যমে ছিল ইংরেজি। এছাড়াও আইএলটিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ওভারঅল ৭.৫ আউট অফ ৯ ব্যান্ড স্কোর এবং স্পিকিং সেকশনেও ৭.৫ ব্যান্ড স্কোর অর্জন করেন।
আমরা তার শিক্ষা জীবনের দিকে তাকালেই অনুমান করতে পারি তিনি সুশিক্ষায় শিক্ষিত একজন মানুষ। মিজানুর রহমান আজহারী নম্র, ভদ্র এবং উদর মনের একজন মানুষ। হিংসা, বিদ্বেষ ও অহংকারের ছিটেফোঁটাও নেই তার মাঝে। তিনি কখনো কাউকে আঘাত দিয়ে কথা বলেন না। তিনি মুসলিম উম্মাহর ঐক্যে বিশ্বাসী। তিনি মনে করেন মুসলিম উম্মাহ ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করলে ইসলামের শত্রুরা কখনই ইসলামের ক্ষতি করতে পারবেনা।
ইসলামের মধ্যে থেকেও নিজেকে যে স্মার্ট ভাবে উপস্থাপন করা যায় তা মিজানুর রহমান আজহারিকে দেখলেই বুঝতে পারবেন। বর্তমান সময়ের যুবকরা তাকে খুবই পছন্দ করে। তার তাফসির মাহফিলে যুবকদের গনস্রত দেখা যায়। তিনিও যুবকদের খুবই পছন্দ করেন এবং তাফসীর মাহফিলে তিনি যুবকদেরকে ভালো পথে চলার আহ্বান করেন। তিনি বিশ্বাস করেন, যুবকরা ভালো পথে চললে ও ইসলামের সাথে থাকলে এগিয়ে যাবে একটি দেশ, সুন্দর হবে একটি সমাজ। আল্লাহর রহমতে তিনি দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি আল্লাহ তাআলা তাকে দিয়েছেন সুমধুর কন্ঠস্বর।
সেই সাথে তিনি সুশিক্ষায় শিক্ষিত এই জন্য আমড়া তাকে একজন পরিপূর্ণ মানুষ বললেও ভুল হবে না। এক কথায় আপনি তাকে অলরাউন্ডার বলতে পারেন। তার সুমিষ্ট ও জ্ঞানমূলক আলোচনা শুনে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ মুগ্ধ।
মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী (Mizanur Rahman Azhari) জীবনীঃ খুব অল্প সময়ে কুরআন হাদিসের সহজ সাবলীলভাবে আলোচনা করে হাজারো মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছেন। তিনি ২০১৯ সালে প্রায় ১৫ হাজার তাফসির-মাহফিলের দাওয়াত পেয়েছেন। তার আলোচনার কারণে তিনি এতটা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। তাকে ইনভাইটেশন এর জন্য রীতিমতো সিডিউল নিতে হচ্ছে। তিনি বাংলা ভাষার পাশাপাশি আরবী ও ইংরেজি ভাষায় খুবই দক্ষ। ইংরেজী ও আরবি ভাষায় অনর্গল কথা বলার কারণে বিভিন্ন দেশের মানুষ তার আলোচনা বুঝতে পারে। তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করেছেন এবং বিভিন্ন সভা-সেমিনারে অংশগ্রহণ করেছেন।
অন্যান্যঃ
মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী জীবনীঃ সোশ্যাল নেটওয়ার্কের মধ্যে তার একটি ফেসবুক আইডি ও একটি অফিশিয়াল ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ রয়েছে। তার ব্যক্তিগত কোন ইউটিউব চ্যানেল নেই। তার মাসিক আয় সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে তাফসির মাহফিলে তিনি চুক্তিবদ্ধ হন না। তাফসির মাহফিলে যেটুকু হাদিয়া পায় তাই তিনি নিয়ে থাকেন। বর্তমানে বছরের বেশিরভাগ সময় তিনি মালয়েশিয়াতে থাকেন। সেখানে পিএইসডি করছেন। পড়াশোনার পাশাপাশি সময় পেলে তিনি তাফসির মাহফিল করে থাকেন। তাছাড়াও তিনি বৈশাখী টেলিভিশনে ইসলাম ও সুন্দর জীবন শিরোনামের একটি প্রোগ্রাম করেছেন।
তবে দুঃখের বিষয় হল তার এই সফলতা ও জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে কিছু ভণ্ড মাজারপুজারি ষড়যন্ত্রকারীরা তার নামে নানা রকমের মিথ্যাচার ছড়াচ্ছে। এই সব ষড়যন্ত্র থেকে আল্লাহ যেন হুজুরকে হেফাজত করে, সেই সাথে তার সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।