গতকাল সোমবার হঠাৎ পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের দাসের ভারানী এলাকায় আগুন লেগে যায়। হঠাৎ লাগা এ আগুন এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। ধোঁয়া উড়ছে এবং কোন কোন জায়গায় সামান্য আগুনের ফুলকিও দেখা যাচ্ছে। এখনও বিদ্যমান বনের ভিতরের এ আগুন পুরোপুরি নেভানোর জন্য বনবিভাগ আজ সকাল থেকে আবারও কাজ শুরু করেছে।
আজ সকাল থেকে বনবিভাগের ১২টি ক্যাম্পের ৮০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী, ফায়ার সার্ভিসের সদস্য স্থানীয়দের সহায়তায় আগুন নেভানোর কাজ করছেন।
অগ্নিকান্ডের পর গতকাল সোমবার দুপুরের দিকে ফায়ার লাইন কেটে পানি দেওয়ায় ঐ এলাকার চারপাশে আগুন আশপাশে খুব বেশি দূর ছড়াতে পারেনি। কিন্তু এখন শুষ্ক মৌসুম হওয়ায় চারপাশে শুকনো পাতা পড়ে রয়েছে। আগুন লাগা স্থানে গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ বেশি। উপরন্তু গাছের ডালপালা-লতাপাতা পড়ে পুরো শুকনো মৌসুমে মাটির ওপর মোটা আস্তরণ সৃষ্টি করেছে। এজন্য আগুন মাটিতে পড়ে থাকা ডালপালা-লতাপাতার ভিতরে রয়েছে যদিও ওপর থেকে দেখা যাচ্ছে না । একারনেই রাতে ঐ এলাকায় বৃষ্টিপাত হলেও সকালে ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়।
জানা যায়, গতকাল দুপুরে আগুন লাগার পর সন্ধ্যা ৭টার দিকেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছিল। এরপর আজ সকালেও আগুন লাগা স্থান থেকে ধোঁয়া উড়তে দেখা যাওয়ায় আবারও কাজ শুরু করা হয়েছে।
জানা যায়, আগুন লাগা এলাকার আশেপাশে প্রায় দেড় থেকে দুই একর বনভূমিজুড়ে আগুনের বিস্তৃতি ঘটেছে। আগুন লাগার কারণ হিসেবে ধারণা করা হচ্ছে, বনের জেলে-বাওয়ালীদের অসতর্কতায় বিড়ির আগুনে এ আগুন লাগার ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। এ কারন ছাড়াও আগুন লাগার পিছনে অন্য কোনো কারণ আছে কি না, তা উদ্ঘাটন করতে ইতোমধ্যেই একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এই তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক মো. জয়নাল আবেদীনকে । তিন জনের কমিটির অপর দুজন হলেন, ফরিদুল ইসলাম যিনি ধানসাগর স্টেশনের স্টেশন অফিসার ও শরণখোলার স্টেশন অফিসার আবদুল মান্নান।
এ আগুন লাগার ঘটনার আগে এ বছরেরই ৮ ফেব্রুয়ারি পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর টহল ফাঁড়ি সংলগ্ন ২৭ নম্বর কম্পার্টমেন্টের বনে আগুন লেগে লেগেছিল।
জানা গিয়েছে, সুন্দরবনে গত ১৫ বছরে ২৮ বার আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে।এতে করে প্রায় ৮০ একর বনভূমি পুড়ে গিয়েছে।
জীব বৈচিত্র রক্ষার দিক চিন্তা করলে, সুন্দরবন এ এত ঘন ঘন আগুন লাগার ঘটনা কোন কাজের কথা নয়। এখনই সময় সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আগুন লাগার ঘটনার কারন অনুসন্ধান করা এবং ভবিষ্যতে যেন আর আগুন না লাগে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া।