গত চব্বিশ ঘন্টার আগ পর্যন্ত একদিনে কোভিড আক্রান্তে শীর্ষে ছিলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এখন এ শীর্ষস্থানে ভারত।
গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে যতজন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে, তা বিশ্ব রেকর্ড। বিশ্বের অন্য কোনো দেশে আগে কখনো এক দিনে এত রোগী শনাক্ত হয়নি।
এ বছরের ৮ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রে একদিনে সর্বোচ্চ ৩ লাখ ৭ হাজার ৫৮১ জন আক্রান্ত হয়েছিল। যা ছিল একদিনে আক্রান্তের দিক দিয়ে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক। টাইমস অব ইন্ডিয়ার তথ্য মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে মোট ৩ লাখ ১৫ হাজার ৯২৫ জন যা একদিনের হিসেবে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ।
গত ৪ এপ্রিল ভারতে একদিনে আক্রান্ত সংখ্যা ছিল এক লাখ। ঠিক ১৭ দিনের মাথায় আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি বেড়ে ৩ লাখ ছাড়িয়ে গেল। দৈনিক আক্রান্তের হার ৬.৭৬ শতাংশ গতিতে বেড়েছে, যা আমেরিকার থেকে চারগুণ বেশি।
ভারতে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছে ২ হাজার ১০২ জন। দেশটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১ লাখ ৮৪ হাজার ৬৭২ জন, আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটি ৫৯ লাখ ২৪ হাজার ৮০৬ জন।
ভারতে গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি করনোয় আক্রান্ত হয়েছে মহারাষ্ট্রে। মহারাষ্ট্রে আক্রান্ত হয়েছে ৬৭ হাজার ৪৬৮ জন। এছাড়াও উত্তর প্রদেশে আক্রান্ত হয়েছে ৩৩ হাজার ১০৬ জন। দিল্লিতে ২৪ হাজার ৬৩৮ জন। কর্ণাটকে ২৩ হাজার ৫৫৮ জন। আর কেরালায় ২২ হাজার ৪১৪ জন।
বিশেষজ্ঞরা ভারতের বর্তমান করোনা পরিস্থিতির অবনতির জন্য ধর্মীয় জমায়েত, নির্বাচনী সভা-সমাবেশ এর মতো বিষয়গুলোকে দায়ি করছেন।
করোনা পরিস্থিতির এ অবনতির জন্য ভারতের স্বাস্থ্য খাত চরম সংকটের মুখোমুখি হয়েছে। দিল্লির হাসপাতালগুলোতে সিট খালি নেই, অক্সিজেনের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে দিল্লি হাইকোর্ট ভিক্ষা করে হলেও মোদি সরকারকে হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহের নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে ভারতেই সন্ধান পাওয়া গিয়েছে ভাইরাসটির ট্রিপল মিউটেড। বিশেষজ্ঞদের মতে, কভিড-১৯ ভাইরাসের তিনটি আলাদা স্ট্রেইন মিলে তৈরি করেছে ভাইরাসের এই নতুন দশা। যার সংক্রামক ক্ষমতা আগের থেকে প্রায় তিন গুণ। যার দ্বারা রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতিও খুব দ্রুত হচ্ছে। ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের এপিডেমিওলজির অধ্যাপক মধুকর পাই বলেছেন, ‘আরও বেশি সংক্রামক করোনার ট্রিপল মিউট্যান্ট। খুব দ্রুত মানুষকে অসুস্থ করে এই প্রজাতি।’
বিশেষজ্ঞরা তাই ধারণা করছেন এবার সঠিক উপায়ে এবং অতি দ্রুত করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে বালির বাধের মতো ধ্বসে পড়বে স্বাস্থ্য খাত,গ্রাস করবে মানুষ নামক সভ্যতা।