আফগানিস্তান থেকে অবশেষে সৈন্য ফেরত আনা শুরু করছে ন্যাটো জোট ও যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, সৈন্য ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া আগামী ১১ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে। আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীন যুদ্ধ এর মাধ্যমে শেষ হচ্ছে বলে আশাবাদী বিশ্ববাসী। আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, আফগানিস্তানের যুদ্ধ শেষ করার প্রক্রিয়া সৈন্য ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে শুরু হলো তার হাত ধরে।
এদিকে বিবিসির সংবাদ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, গত বছর সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধ শেষ করা নিয়ে তালেবানদের সাথে একটি চুক্তি করেছিল। সেই চুক্তি অনুযায়ী ২০২১ সালের মে মাসের মধ্যে সৈন্য প্রত্যাহার প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার কথা ছিল। এদিকে সৈন্য প্রত্যাহারের শর্ত ছিল, সৈন্য প্রত্যাহার শেষ করার আগে পর্যন্ত কোনো আন্তর্জাতিক সৈন্যদের ওপর হামলা করা যাবে না। মে মাসের মধ্যে সৈন্য ফিরিয়ে নেয়ার কথা থাকলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তা সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত পিছিয়ে নেন। তিনি মনে করেন আরো কিছু সময় আফগানিস্তানে সৈন্য মোতায়েন রাখাটা জরুরি।
২০ বছর আগে আফগানিস্তানের যুদ্ধ শুরু করেছিল ন্যাটো জোট ও মার্কিন বাহিনী। টুইন টাওয়ার হামলার পর মার্কিন বাহিনী সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আফগানিস্তানে জঙ্গি আস্তানার অস্তিত্ব রয়েছে অভিযোগ এনে ২০ বছর আগে আফগানিস্তানে সৈন্য মোতায়েন করে যুক্তরাষ্ট্র।
২০০১ সাল থেকে চলা আফগানিস্তানের যুদ্ধে মোট ২ লাখ ৪১ হাজারের মতো সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছে। মৃতদের বেশিরভাগই সাধারণ মুসলিম জনতা। আমেরিকার মোট ২৩১২ জন সৈন্য বিগত ২০ বছরের যুদ্ধে মৃত্যুবরণ করেছে।
২০ বছর ধরে চলা এই যুদ্ধে আমেরিকার মোট খরচ হয়েছে ৯৭৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিশ হাজারের মতো মার্কিন সৈন্য এই যুদ্ধে আহত হয়েছে। আফগানিস্তানের সৈন্য ও পুলিশ মিলিয়ে মোট ৬৪,১০০ জন এই যুদ্ধে মারা গেছে।
অবশেষে দীর্ঘ ২০ বছর পর রক্তক্ষয়ী এই যুদ্ধ সমাপ্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ২০ বছর ধরে চলা যুদ্ধে আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। অনেক মানুষ ঘরছাড়া হয়েছে, অনেক মানুষ হয়েছে বিকলাঙ্গ। এছাড়াও আমেরিকা ও ন্যাটো সৈন্যদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ উঠেছে। অনেক নিরীহ অস্ত্রহীন মানুষকে তারা বিনা অপরাধে হত্যা করেছে। সবমিলিয়ে আফগানিস্তানের অবস্থা হচ্ছে হৃদয় বিদারক। অবশেষে আফগানিস্তানের যুদ্ধ সমাপ্ত হতে চলেছে।