বিজ্ঞান জিজ্ঞাসা

শীতাতপ নিয়ন্ত্রক যন্ত্র (এসি) থেকে বের হওয়া পানি আমরা কেন পান করি না? এই পানি কি পানযোগ্য?

এসি থেকেও তো আমরা পানি বের হতে দেখি। তাই না? এসি থেকে বের হওয়া পানি পান করলে সমস্যা কোথায়? এই এসি থেকে বের হওয়া পানি করা কি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর?  চলুন জেনে আসার চেষ্টা করি। 

 

এসি থেকে বের হওয়া পানি ক্ষতিকর কি না আমাদের দেহের জন্য  তা জানতে হলে আগে আমাদের এসি কিভাবে কাজ করে সেই ক্রিয়া কৌশল সম্পর্কে বুঝতে হবে। এসির ভিতর থাকে রেফ্রিজারেন্ট নামক একপ্রকার শীতল পদার্থ। এসি কি করে? এসি যে ঘরে লাগানো হয় সে ঘর এর মধ্যে যে বাতাস থাকে সেই বাতাসকে টেনে নিজের কাছে নিয়ে আসে। এসি এই বাতাস তার ভিতরে থাকা রেফ্রিজারেন্ট নামক তরল পদার্থের সংস্পর্শে প্রবাহিত করে। ঘরের গরম বাতাস এই ঠান্ডা রেফ্রিজারেন্ট নামক তরলের সংস্পর্শে এলে বাতাসের ভিতর থাকা জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে পানিতে পরিণত হয়। এই জলীয়বাষ্প  ঘনীভূত হয়ে তৈরি হওয়া পানিকেই আমরা এসি থেকে বার হতে দেখি। আর রেফ্রিজারেন্ট তরলের সংস্পর্শে এসে ঘরের বাতাস ঠান্ডা হয়ে ঘরের মধ্যে প্রবাহিত হয়। ফলে ঘর ঠান্ডা হয়। এভাবে এসি কাজ করে।

 

কিন্তু এখন প্রশ্ন হলো এসি থেকে বের হওয়া এই পানি কি পানযোগ্য? 

না এই পানি মোটেই পানযোগ্য নয়। কারণ ঘরের বাতাসে অনেক ধুলিকণা, রোগজীবাণু, ভাইরাস ইত্যাদি থাকে। আমরা যদি এই পানি পান করি তবে আমরা নানা রকম জটিল রোগে আক্রান্ত হব। কারণ এই এসি থেকে বের হওয়া পানিতে ঘরের মধ্যে থাকা জীবাণু, ভাইরাস এগুলোও থেকে যায়। তবে এই পানি পান না করা গেলেও এই পানি আমরা গাছের গোড়ায় কিংবা ঘরবাড়ি, গাড়ি  ধৌত করার কাজে ব্যবহার করতে পারি। কিন্তু এসি থেকে বের হওয়া পানি মোটেও পান করা যাবে না। এছাড়াও এসি ব্যবহার করা পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। আমাদের পৃথিবীর উষ্ণতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এসি, ফ্রিজ এগুলো থেকে বের হওয়া নানা রকম ক্ষতিকর গ্যাস ওজোন স্তর ধ্বংস করে দেয়। ফলে ক্ষতিকর অতিবেগুনী রশ্মি পৃথিবীতে আগমন করে। পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়ে যায়। ফলে মেরু অঞ্চলের বরফ গলে যাচ্ছে। সমুদ্র পৃষ্ঠের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়াই বাংলাদেশের মতো নিচু ভূমির দেশগুলোর অস্তিত্ব হুমকির সম্মুখীন। তাই এসি ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। যথাসম্ভব কম সময় এসি চালিয়ে রাখতে হবে। প্রয়োজন ছাড়া এসি চালানো যাবে না।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link