ভোল মাছের এত দাম কেন?

ভোল মাছ কেনও এত দামি? হঠাৎ করেই টেলিভিশন, নিউজ মিডিয়ায় খবর দেখে থাকবেন, সাগরে জেলের জালে ধরা পড়েছে ভোল মাছ যা বিক্রি হয়েছে চার থেকে পাঁচ লাখ টাকায়। কিন্তু কেন এই মাছের এত দাম? এই মাছ জেলের জালে আটকে পড়লে জেলের ভাগ্য কেনও পরিবর্তন হয়ে যায়? 

 

ভোল মাছের বৈজ্ঞানিক নাম ‘প্রোটোনিবিয়া ডায়াকানথুস’। ভোল মাছ হলো এক প্রকার ওষুধি মাছ। এই মাছ একদিকে যেমন খেতে খুবই সুস্বাদু। তেমনি এই মাছের রয়েছে নানা ওষুধি গুণ। ভোল মাছের পুরো শরীরই ঔষধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। ভোল মাছের বায়ু পটকা থেকে কিডনি রোগ নিরাময়ের ঔষধ তৈরী করা হয়। এই ঔষধ দিয়ে কিডনী রোগীদের কিডনির কার্যকরীতা বজায় রাখা হয়। কিডনির পাথর নিরসনে ব্যবহৃত হয় ভোল মাছের পটকায় থাকা রস। ভোল মাছের হৃদয় মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ভোল মাছের হৃদয়ে রয়েছে এন্টি অক্সিডেন্ট সহ নানাবিধ পুষ্টি উপাদান। এটি রোগাক্রান্ত ব্যক্তির জন্য পুষ্টিকর খাবার হিসেবে বিবেচিত বিশ্বব্যাপী।  তাই এ মাছের হৃদয়কে সোনার হৃদয়ও বলা হয়। ভোল মাছের শরীর নানা পুষ্টি উপাদান ও খনিজ পদার্থে ভরপুর। এমনকি এই মাছের পায়খানা থেকেও ওষুধ তৈরি হয়। এই মাছের শরীর থেকেই এমন বিশেষ ধরনের সুতো তৈরি হয় যা দিয়ে মানবদেহে সেলাই করলে ঘা শুকানোর পর সুতো শরীরের সাথেই মিশে যায়। এই ভোল মাছ থেকে খুব দামি মদও তৈরি করা হয়। সর্বোপরি ওষুধ তৈরিতেই এই মাছ সবথেকে বেশি ব্যবহৃত হয়৷ তাই বিশ্বের নামী দামী ওষুধ কোম্পানির কাছে এই মাছের রয়েছে বিশেষ চাহিদা। কিন্ত এই মাছ সমুদ্রে খুব সহজে পাওয়া যায় না। বলা চলে, এটি একটি দুর্লভ মাছ৷ সে কারণে এই মাছের দামও বেশি। তাই একবার কোনো জেলের জালে এই মাছ আটকা পড়লে সেই জেলের ভাগ্য খুলে যায়। ২৫ কেজি ওজনের ভোল মাছ বিক্রি হয় চার থেকে পাঁচ লাখ টাকায়। স্ত্রী ভোল মাছের চেয়ে পুরুষ ভোল মাছের দাম আরও বেশি হয়। ভোল মাছ মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া এই দেশগুলোর মানুষের কাছে অনেক পছন্দনীয় খাবার। বাংলাদেশের বঙ্গোপসাগরে এই ভোল মাছ মাঝে মধ্যে হঠাৎ করেই অনেক সময় জেলেদের জালে আটকে পড়ে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *