স্বাস্থ্য

ধাতু রোগ এর প্রধান কারণ, লক্ষণ এবং চিকিৎসা

ধাতু রোগ – Dhat Syndrome in Bengali 

 

ধাতু রোগ হলো এমন একটি রোগ যেখানে কোনো কারণ ছাড়াই পুরুষ মানুষের বীর্যপাত হয়। অর্থাৎ সেক্স করা বা হস্তমৈথুন করা ছাড়াই পুরুষের বীর্য বার হয়ে যায়। ধাতু রোগ হলে ঘুমের মধ্যে বা এমনিতে জাগ্রত অবস্থায় সামান্য যৌনচিন্তা করলেও বীর্যপাত হতে পারে।

 

ধাতু রোগ কি? – What is Dhat Syndrome in Bengali? 

 

ধাতু ক্ষয় বা ধাতু রোগ হলো স্বপ্নদোষ অত্যধিক, অনিচ্ছাকৃত স্রাবের একটি অবস্থা। 

প্রথমে আপনি হস্তমৈথুন পুরোপুরি ত্যাগ করুন,যদি তাতেও সমাধান না হয় তাহলে অতি শীঘ্রই ডাক্তারের কাছে যান না হলে সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে। 

 

ধাতু রোগের প্রধান উপসর্গ – Symptoms of Dhat Syndrome in Bengali 

 

  • মল বা মুত্রত্যাগের সময় চাপের জন্য ইচ্ছে হওয়া কিন্তু ধাতু রোগের একটি ইশারা বলতে পারেন।
  • লিঙ্গের মুখ থেকে লালা পড়া।
  • পৌরুষ বীর্যের পাতলা হয়ে যাওয়া।
  • শরীরের দুর্বলতা অনুভব করা।
  • ছোট ছোট ব্যাপারে অধিক চিন্তা করা।
  • হাতে বা শরীরের অন্য কোনও অংশে কম্পন অনুভব করা।
  • পেটের ব্যথায় ভুগলে বা পেট পরিষ্কার না হ’লে, কোষ্ঠকাঠিন্য হলে।
  • শ্বাস নেওয়ার সমস্যা বা কোনও রকম শ্বাসকষ্ট হ’লে, কাশি হলে।
  • শরীরে যদি ব্যথা করতে থাকে।
  • অল্প বা বেশি মাথা ঘুরতে থাকলে।
  • সর্বক্ষণ শরীরের দুর্বলতা অনুভব করলে।
  • শারীরিক তৎপরতা বা ফুর্তির অভাব দেখা দিলে।
  • মনে সবসময় অপ্রসন্ন ভাব থাকা এবং কোনও কাজ করতে ইচ্ছে না হওয়াও ধাতু রোগের উপসর্গ।

 

ধাতু রোগের প্রধান কারণWhat is the main reasons of Dhat Syndrome in Bengali? 

 

  • অত্যধিক কামদ ও অশ্লীল ভাবনা চিন্তা করা।
  • মন অশান্ত থাকা।
  • কখনও কোনও দুঃখের ঘটনা মনে পড়ে যাওয়া।
  • মস্তিষ্ক কমজোরি হওয়া।
  • ব্যক্তির শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টি বা ভিটামিনের কম থাকার কারণে।
  • কোনও অসুখের কারণে কোনও নির্দিষ্ট ওষুধ খাওয়ার ফলে।
  • ব্যক্তির শারীরিক দুর্বলতা বা প্রতিরোধক ক্ষমতা কমে যাওয়ার ফলে।
  • কোনও ঘটনা নিয়ে অধিক চিন্তা করার জন্যে।
  • বীর্য পাতলা হয়ে গেলে।
  • পুরুষের যৌনাঙ্গের নার্ভের সমস্যার কারণে।
  • যৌন ধাতু প্রয়োজনের চেয়ে বেশি বের করে দিলে(অত্যধিক হস্তমৈথুন করলে)।
READ MORE:  কাঁচা আদা কেনও খাবেন?

 

ধাতু রোগের প্রতিরোধ – Prevention of Dhat Syndrome in Bengali 

 

  • হস্তমৈথুন করবেন না। 
  • ব্যায়াম করবেন
  • পর্নগ্রাফী এড়িয়ে দেখবেন না ।
  • যৌন বিষায়ক চিন্তাভাবনা করবেন না।
  • বন্ধুত্ব পূর্ণ সুস্থ সুন্দর সম্পর্ক সৃষ্টি করবেন।
  • কোন পর্নগ্রাফী দেখবেন না শোয়ার আগে বা শোয়ার সময়।
  • ঢিলাঢালা রাতের পোশাক পড়বেন সব সময়।
  • টাইট আন্ডারওয়ার পরবেন না। 
  • দুঃশ্চিন্তা কমাবেন । 
  • পর্যাপ্ত পরিমানে ঘুম ও বিশ্রাম নেবেন।
  • নিয়মিত পুষ্টিকর খাদ্যখাবেন।
  • আপনার smoking বা alcohol এর অভ্যাস থাকলে তা পরিহার করুন আস্তে আস্তে।
  • ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলুন। 
  • রাতে বেশি পানি পান করবেন না রাতে কম খাবার খাবেন
  • খাবার পর হাটাহাটি করুন। খাওয়ার সাথে সাথে ঘুমাতে যাবেন না।
  • রাতে মাছ,মাংস,দুধ,শিদ্ধডিম খাবেন না। ইহা দুপুরবেলা খাবেন অবশ্যই ।

 

ধাতু রােগ এর চিকিৎসা – Treatment of Dhat Syndrome in Bengali

 

 রাত্রিকালীন ধাতু রােগের চিকিৎসার প্রয়ােজন নেই। 20 বছর বয়সের পরে এই রােগ নিজে থেকেই নিরাময় হয়ে যায়। যৌন সঙ্গম বা হস্তমৈথুন কম করলে রাত্রিকালীন বীর্যপাত ঘন ঘন হয়। ধাতু রােগের কারণের উপর নির্ভর করে ধ্যান করবার পরামর্শ দেওয়া হয়। ভেষজ ওষুধও ধাতু রােগে সাহায্য করে। ধাতু রােগ নিয়ন্ত্রণে কিছু খাদ্য সাহায্য করে, যেমন আনারস, কুল এবং মাটির নিচে হওয়া সবজি যেমন আদা এবং পিঁয়াজ।

 

ধাতু রােগের জন্য ভেষজ ওষুধ:

  • সারা রাত ভিজিয়ে রাখা এলমণ্ড বাদামের সাথে  এক গ্লাস দুধ। 
  • দুই তিনটি জাফরান’এর সাথে এক গ্লাস গরম দুধ। 
  • তিন থেকে চারটি রসুনের কোয়া রােজ চিবিয়ে

খেতে হবে। 

  • ভেষজ অনুমােদিত বিধি: অশ্বগন্ধা, বালা এবং বিদার এবং ছাগলের গরম দুধ (ছাগলের দুধ গরুর দুধের চেয়ে বেশি প্রভাবশালী, কিন্তু ছাগলের দুধ না পাওয়া গেলে গরুর দুধ চলবে)। • প্রত্যেক দিন এক কাপ গরম জলে অর্ধেক টেবিল চামচ পূর্ণ এস্পারাগাস।
  • প্রত্যেক দিন সকালে দুধের সাথে এক টেবিল চামচ পূর্ণ লাজবন্তী গুড়াে। 
READ MORE:  কুষ্ঠ রোগ কি? কারণ ও চিকিৎসা

 

ধাতু রোগের আয়ুর্বেদিক উপশম

 

গুলঞ্চ: ধাতু রোগের নিরাময়ের জন্যে ২ চামচ গুলঞ্চের রস ১ চামচ মধুতে মিশিয়ে খেতে হবে রোজ।

আমলা:প্রতিদিন সকালে খালি পেটে মধুর সাথে ২ চামচ আমলার রস খেলে খুব শীঘ্রই ধাতুর গুণমাণ বৃদ্ধি পায়। সকালে ও বিকেলে আমলকির রস দুধে মিশিয়ে পান করলেও ধাতু রোগের নিরাময়ে লাভজনক ফল পাওয়া যায়।

তুলসী: ৩ থেকে ৪ গ্রাম তুলসীর বীজ অল্প মিছরির দানার সাথে মিশিয়ে রোজ দুপুরের খাবার খাওয়ার পর খেলে এই রোগের দ্রুত উপশম পাওয়া যাবে।

সাদা মুস্‌লি (সাদা শতমূলী): আপনি যদি ১০ গ্রাম সাদা মুস্‌লির গুঁড়ো মিছরির সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন আর তারপর ৫০০ মি.লি. গরুর দুধ পান করতে পারেন, তবে সেটা আপনার পক্ষে ভীষণ লাভজনক হবে। এই পদ্ধতিতে খেলে, আপনার শরীরের অভ্যন্তরীণ শক্তিকে বাড়বে এবং রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতাও বাড়বে।

উরাদ ডাল: উরাদ ডাল গুঁড়ো করে মাটির পাত্রে সেঁকে নিয়ে যদি খাওয়া যায়, তবে আশাতীত ফল পাওয়া যায়।

কালো জামের বীজ: কালো জামের বীজ রোদে শুকিয়ে নিয়ে তার গুঁড়ো করে যদি দুধের সাথে রোজ খাওয়া যায়, তাহলে ধাতু রোগের থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

 

জীবনধারার পরিবর্তন

 

 নিজের যত্নের টিপসগুলির একটি তালিকা নিচে দেওয়া আছে যা আপনাকে ধাতু রােগ নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করতে পারে:

 

  • হালকা সান্ধ্যভােজন করুন। 
  • রাত্রে শক্ত গদিতে ঘুমানাের চেষ্টা করুন।
  • ঘুমানাের সময়ে আঁট অন্তর্বাস বা বস্ত্র পড়বেন না। 
  • পুষ্টিকর এবং সুষম খাদ্য ভােজন করুন যাতে

থাকবে প্রচুর কাঁচা এবং তাজা সবজি এবং ফল।

  • মদ্যপান কমিয়ে দিন।
  • ঘড়িতে এলার্ম দিয়ে সকালে তাড়াতাড়ি বিছানা

ছাড়ুন, কারণ ধাতু রােগ সাধারণত শেষ রাতে হয়।

  • যৌনাঙ্গের জায়গা পরিষ্কার রাখুন।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে ডাক্তারবাবুর কাছ থেকে পরামর্শ নিন।
  • কেগেল ব্যায়াম করলে পেলভিকের মেঝের পেশী শক্তিশালী হয় এবং এতে ধাতু রােগ নিয়ন্ত্রিত হয়। আপনার পেলভিকের মেঝের পেশী (যে পেশী আপনার আপনার মূত্রাশয়, অন্ত্র, এবং প্রস্রাবের নালীকে ধরে রাখে) পাঁচ সেকেন্ডের জন্য সংকোচন করুন তারপর পাঁচ সেকেন্ডের জন্য শিথিল করুন। নিঃশ্বাস প্রশ্বাস স্বাভাবিক থাকবে। এই ব্যায়াম 10 বার করুন। ব্যায়াম করার সময় যদি অসুবিধা বােধ করেন, তাহলে কিছুক্ষণের জন্য বিশ্রাম নিয়ে আবার চেষ্টা করুন।। 
  • মশলাদার খাবার পরিত্যাগ করুন।
  • ঠাণ্ডা হলে স্নান করুন।
  • ঘুমানাের আগে প্রস্রাব করে নিন।
  • রাতে ঘুমানাের আগে জল খাবেন না।
  • বই পড়ার এবং ভাল গান শােনার অভ্যাস করুন তাহলে আপনার মনের পরিবর্তন হবে এবং আপনার মন ব্যস্ত থাকবে।
READ MORE:  ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ, করণীয় এবং প্রতিরোধ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *