কী এবং কেন?

এপেন্ডিক্স এর লক্ষণ এবং এপেন্ডিসাইটিস অপারেশন

এপেন্ডিক্স হলো শরীরের একটি অঙ্গ। আর এপেন্ডিসাইটিস হল এপেন্ডিক্স এর জন্য সৃষ্ট একটি রোগ। 

 

এবার আমরা এপেন্ডিক্স নামক অঙ্গ এবং এপেন্ডিসাইটিস নামক রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জানব। 

এপেন্ডিক্স এর লক্ষণ এবং এপেন্ডিসাইটিস অপারেশন

আমাদের পেট এর অভ্যন্তরে বৃহদন্ত্রের সাথে লাগানো একটি ছোট অঙ্গ রয়েছে। অঙ্গটি নলাকার এবং দৈর্ঘ্যে দুই থেকে বিশ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হতে পারে। এটির অবস্থান আমাদের পেটের নাভির পাশে একটু নিচে তলপেটের ডান দিকে।   আমাদের দেহে  এই অঙ্গটির কোন প্রয়োজনীয়তা নেই বলেই চিকিৎসকরা মনে করেন। এই ছোট নলাকার অঙ্গটির ইনফেকশনের কারনে অঙ্গটি ফুলে গিয়ে  এপেন্ডিসাইটিস নামক রোগটির সৃষ্টি হয়। 

 

যদিও আমাদের দেহে এপেন্ডিক্স নামক অঙ্গটির কোন প্রয়োজনীয়তা নেই কিন্তু এপেন্ডিসাইটিস গুরুতর অবস্থায় পৌঁছালে তা মৃত্যুর কারন হতে পারে। এমনই একটি অবস্থা হচ্ছে পেরিটোনাইটিস। কোন কারনে যখন এপেন্ডিক্স ফেটে গিয়ে পেটের সর্বত্র অ্যাপেন্ডিক্স এর ভেতরের জীবাণু ছড়িয়ে পড়ে তখন এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। এ অবস্থার সৃষ্টি হলে পেটে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয় এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এপেন্ডিক্স এর লক্ষণ

 

আবার আরেকটি অবস্থা রয়েছে যেটি হল এপেন্ডিসাইটিস রাম্বলিং। এপেন্ডিসাইটিস এর কারণে যখন পেটে কম ব্যথা অনুভূত হয় তখন সে অবস্থাকে এপেন্ডিসাইটিস রাম্বলিং বলে। 

 

আবার পেটের ডান দিকে বা নাভির চারপাশে ব্যথা হলেই যে এপেন্ডিসাইটিস হয়েছে তা নিশ্চিত ভাবে বলা যাবেনা। এজন্য দরকার চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া যে আসলেই এপেন্ডিসাইটিস হয়েছে কিনা। অনেক অভিজ্ঞ ডাক্তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই কিছু উপসর্গ দেখেই বলে দিতে পারেন যে এপেন্ডিসাইটিস হয়েছে কিনা। এরকম কিছু উপসর্গ এখানে উল্লেখ করাই যায়- কাশি দেওয়ার সময় পেটে প্রচন্ড ব্যথা, তলপেটের ডান দিকে বা বাম দিকে চাপ দিলে এর বিপরীত দিকে প্রচন্ড ব্যথা। আবার এপেন্ডিসাইটিস ছাড়াও মহিলাদের নানা কারনে তলপেটে ব্যথা হতে পারে। একই কথা পুরুষদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। তাই উপরের উপসর্গগুলো দেখা দিলেই সেটি এপেন্ডিসাইটিস হয়েছে বলে ধরে নেওয়া যাবে না। তবে পেট ব্যাথা, কাজকর্মের সময় পেট ব্যাথা, কিছুক্ষন পরপর জ্বর, খিদে না লাগা, বমি বমি ভাব ও বমি, কোষ্ঠকাঠিন্য এই লক্ষনগুলো দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে । চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিশ্চিত হতে হবে যে আসলেই এপেন্ডিসাইটিস হয়েছে কিনা। চিকিৎসক প্রয়োজনবোধে আলট্রাসাউন্ড অথবা রক্ত পরীক্ষা দ্বারা এপেন্ডিসাইটিস নির্ধারণ করবেন। এছাড়াও ব্লাড টেস্ট, ইউরিন টেস্ট, পেটের এক্সরে, পেটের সিটি স্ক্যান করেও এ রোগ নির্ধারণ করা হয়। এপেন্ডিক্স এর লক্ষণ

 

 

পূর্বে পরিবারের কারো যদি এ রোগ হয়ে থাকে তাহলে শিশুদের এ রোগ হওয়ার  সম্ভাবনা। রিফাইন্ড কার্বোহাইড্রেট খাবার বেশি খেলে আর   আঁশ জাতীয় খাবার যেমন ফলমূল ও শাকসবজি কম খেলে এ রোগ হতে পারে।  

এপেন্ডিসাইটিস অপারেশন

এপেন্ডিসাইটিস রোগের কার্যকরী এবং স্থায়ী চিকিৎসা হচ্ছে অপারেশনের মাধ্যমে এপেন্ডিক্স অঙ্গটি কেটে ফেলা। পেট কেটে অথবা পেট না কেটে উভয় ভাবেই এপেন্ডিক্স কেটে ফেলা যায়। পেট না কেটে এপেন্ডিক্স অপসারণ করার অপারেশনকে ল্যাপারোস্কপি বলে।

 

কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যঃ

 সাধারণত নারীদের থেকে পুরুষদের এপেন্ডিসাইটিস রোগটি বেশি হয়। যেকোনো বয়সেই এপেন্ডিসাইটিস রোগটি হতে পারে তবে এগার থেকে বিশ বছর বয়সীদের এ রোগ হওয়ার হার বেশি। বছরের যে কোনো সময় এ রোগ হতে পারে তবে শীতকালে এ রোগ হওয়ার হার বেশি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link